উত্তরঃ
জেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকায় উপদ্রব বা বিপদাশংকর জরুরী ক্ষেত্রে পরিস্থিতির দ্রুত প্রতিকারকল্পে তৎক্ষনাৎ আদেশ জারীর পদ্ধতির ক্ষেত্রে পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে। জেলা শহর এলাকায় এই আদেশ সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জারী করেন। কার্যবিধির ১৪৪ ধারা। অপরদিকে মেট্রোপলিটন এলাকায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কমিশনার এই আদেশ জারী করেন। ডিএমপি অধ্যাদেশের ৪, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ ধারা, ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪(৭), ১২৯ ধারা। নিম্নেউভয় ক্ষেত্রে আদেশ জারীর পদ্ধতি নিম্নেআলোচনা করা হলোঃ জেলা এলাকায় উপদ্রব বা বিপদাশংকর জরুরী ক্ষেত্রে পরিস্থিতির দ্রুত প্রতিকারকল্পে তৎক্ষনাৎ আদেশ জারীর পদ্ধতিঃ
১। যে সকল ক্ষেত্রে আশু প্রতিরোধ বা দ্রুত প্রতিকার একান্ত বাঞ্ছনীয় সেক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আইনসঙ্গতভাবে নিযুক্ত ব্যক্তি প্রতি বাধা, বিরক্তি বা আঘাত বা বাধা, আঘাতের ঝুঁকি, মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার প্রতি বিপদ, সর্বসাধারণের শান্তির ব্যাঘাত বা কোন দাঙ্গা হাঙ্গামা প্রতিরোধের সম্ভাবনা নিবারণে লিখিত আদেশ এই আদেশ জারী করতে পারেন। কার্যবিধির ১৪৪(১) ধারা।
২। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জরুরী পরিস্থিতিতে একতরফাভাবে এই আদেশ জারী করতে পারেন। কার্যবিধির ১৪৪(২) ধারা।
৩। এই আদেশ কোন বিশেষ স্থানে ঘন ঘন গমনকারী ব্যক্তি বা জনসাধারণের প্রতি সাধারণভাবে নির্দেশিত হবে। কার্যবিধির ১৪৪(৩) ধারা।
৪। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্ব-উদ্যোগে বা কোন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির আবেদনক্রমে তৎক্ষনাৎ জারীকৃত আদেশ বাতিল বা পরিবর্তন করতে পারেন। কার্যবিধির ১৪৪(৪) ধারা।
৫। এইরূপ কোন আবেদন পেলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনকারী ব্যক্তিকে শীঘ্র ডেকে কারণ দর্শানোর সুযোগ দিবেন। কার্যবিধির ১৪৪(৫) ধারা।
৬। মানুষের জীবন, স্বাস্থ বা নিরাপত্তার প্রতি বিপদ বা দাঙ্গা বা মারপিটের আংশকার ক্ষেত্রে সরকারী গেজেটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি দুই মাসের অধিক বলবৎ হবে না। কার্যবিধির ১৪৪(৬) ধারা।
৭। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর আদেশ মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রযোজ্য হবে না। কার্যবিধির ১৪৪(৭) ধারা।
৮। জেলা শহর এলাকায় বিপদাশংকর জরুরী ক্ষেত্রে পরিস্থিতির দ্রুত প্রতিকারকল্পে পুলিশের আবেদনক্রমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তৎক্ষনাৎ বলবৎ আদেশ জারী করলে পুলিশ বিপদাশংকুল এলাকায় ও জনাকীর্ণ স্থানে মাইকিং করবে এবং পাঁচ জনের বেশি লোক একত্রে হতে দিবে না। কার্যবিধির ১৪৪(১) ধারা। পুলিশ আইনের ২৩ ধারা।
মেট্রোপলিটন এলাকায় উপদ্রব বা বিপদাশংকর জরুরী ক্ষেত্রে পরিস্থিতির দ্রুত প্রতিকারকল্পে তৎক্ষনাৎ আদেশ জারীর পদ্ধতিঃ
১। যে সকল ক্ষেত্রে আশু প্রতিরোধ বা দ্রুত প্রতিকার একান্ত প্রয়োজন সেক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার তার এখতিয়ারাধীন মেট্রোপলিটন এলাকায় আইনসঙ্গতভাবে নিযুক্ত ব্যক্তি প্রতি বাধা, বিরক্তি বা আঘাত বা বাধা, আঘাতের ঝুঁকি, মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার প্রতি বিপদ, সর্বসাধারণের শান্তির ব্যাঘাত বা কোন দাঙ্গা হাঙ্গামা প্রতিরোধের সম্ভাবনা নিবারণে লিখিত আদেশ এই আদেশ জারী করতে পারেন। কার্যবিধির ১৪৪(৭), ১২৯ ধারা।
২। যে কোন মেট্রোপলিটন এলাকায় বা উদাহরণ স্বরূপ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কোন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কর্তৃত্ব থাকবে না। ডিএমপি অধ্যাদেশের ৪ ধারা।
৩। ডিএমপি অধ্যাদেশের ২৭ ধারা মোতাবেক পুলিশ কমিশনার নিম্নলিখিত কার্যাদি নিশ্চিতকরণের জন্য তৎক্ষনাৎ বলবৎ আদেশ জারী করতে পারেনঃ
(ক) রাস্তায় মিছিল বা সমাবেশকারীদের শৃংখলাপূর্ণ আচরণ নিশ্চিত করা
(খ) কোন মিছিল কোন রাস্তা দিয়ে কোন সময় যাবে তা নির্দিষ্ট করা
(গ) মিছিল বা সমাবেশ উপলক্ষ্যে এবং উপাসনার সময় উপাসনালয়ের পার্শ্ববর্তী স্থানসমূহে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে রাস্তা বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থান অবরুদ্ধ করা, নির্মাণ কাজ বন্ধ করা
(ঘ) সকল রাস্তা, সাধারণের গোসল ও কাপড় কাঁচার স্থান ও অন্যান্য সকল প্রকাশ্য স্থানে শৃঙ্খলা বজায় রাখা
(ঙ) কোন রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহৃত স্থানে গান-বাজনা, বাদ্যযন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা (চ) কোন রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহৃত স্থানে বা ভোজনালয়ে লাউড স্পীকার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা
৪। ডিএমপি অধ্যাদেশের ২৮ ধারা মোতাবেক পুলিশ কমিশনার নিম্নলিখিত বিশৃঙ্খলা রোধকল্পে ও কতিপয় কার্যাদি নিষিদ্ধ করার জন্য তৎক্ষনাৎ বলবৎ আদেশ জারী করতে পারেনঃ
ক) আগ্নেয়াস্ত্র, তরবারি, বর্শা, বন্দুক, ছুরি, ছড়ি বা লাঠি বা এমন কিছু যা ক্সদহিক আঘাত করার উপযোগী
খ) কোন প্রকার ক্ষার জাতীয় বা বিস্ফোরক দ্রব্য বহন করা গ) পাথর বা নিক্ষেপযোগ্য অন্য কোন বস্তু বা যন্ত্র
ঘ) প্রকাশ্যে চিৎকার করা, গান গাওয়া ও বাদ্যযন্ত্র বাজান
ঙ) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যহত করে জনসমুক্ষে এমন বক্তৃতা, ছবি, প্রতীক, প্লাকার্ড বা অন্য কোন বস্তু প্রদর্শন
৫। ডিএমপি অধ্যাদেশের ১৭, ২৮ ও ২৯ ধারা মোতাবেক বিশৃঙ্খলা রোধকল্পে পুলিশ কমিশনারের কতিপয় কাজ, সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে তৎক্ষনাৎ বলবৎ আদেশ জারী করতে পারবেন।
৬। মেট্রো এলাকায় পুলিশ কমিশনার তৎক্ষনাৎ বলবৎ আদেশ জারীর পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও পরিস্থিতির প্রয়োজনে ফৌজদারী কার্যবিধির ১২৯ ধারা মোতাবেক সামরিক শক্তি আহবান করতে পারে।