উত্তরঃ
শ্রুতসাক্ষ্যঃ সাক্ষ্য আইনের ৬০ ধারা মতে যদি কোন ব্যক্তি আদালতে এমন কোন বিষয় সম্পর্কে সাক্ষ্য প্রদান করেন, যা তিনি কারো কাছ থেকে শুনেছেন বলে সাক্ষ্য দেন তবে উক্ত সাক্ষ্যকে শ্রুত সাক্ষ্য বা শোনা সাক্ষ্য বলে। অপরের কাছ থেকে শুনা শ্রুত সাক্ষ্য আদালতে অপ্রাসঙ্গিক। কতিপয় ক্ষেত্রে এ ধরনের সাক্ষ্য প্রাসঙ্গিক করা হয়েছে। যেমন-
১। মৃত্যুকালীন জবানবন্দীঃ মৃত্যুর পূর্বে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে মুমুর্ষ অবস্থায় আহত ব্যক্তি যদি বিবৃতি দেয় এবং তা কেউ শুনে বা লিখে পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তি শ্রুত সাক্ষ্য দিতে পারবে। সাক্ষ্য আইনের ৩২(১) ধারা।
২। স্বীকৃতিঃ ফৌজদারীবা দেওয়ানী আদালতে স্বীকৃতি শ্রুতসাক্ষ্য হলেও প্রাসঙ্গিক। সাক্ষ্য আইনের ১৭ হতে ২৩ ধারা।
৩। স্বীকারোক্তিঃ অপরাধী নিজের দোষ স্বীকার করে ম্যাজিষ্ট্রেট বা অন্য কোন ব্যক্তির কাছে যে বিবৃতি দেয় তা শ্রুত সাক্ষ্য হলেও আদালতে প্রাসঙ্গিক। সাক্ষ্য আইনের ২৪ হতে ৩০ ধারা।
অভিমত সাক্ষ্য:- সাক্ষ্য আইনের ৪৫ ধারা মতে যখন কোন বিদেশী আইন, বিজ্ঞান, চারুকলা, হস্তাক্ষর বা টিপসহি সনাক্তকরণের জন্য আদালতে ঐ সমস্ত বিষয়ে পারদর্শী বা অভিজ্ঞ ব্যক্তির মতামত বা অভিমতকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হলে তাকে অভিমত সাক্ষ্য বলা হয়।
তৃতীয় পক্ষ সাক্ষীঃ যে সকল সাক্ষী বাদী বা বিবাদী কারো পক্ষে বা বিপক্ষে সাক্ষ্য দেন না তাদেরকে তৃতীয় পক্ষ সাক্ষী বলা হয়। আদালতের প্রয়োজনীয় কোন বিষয়ে তারা অভিমত বা মতামত দিয়ে থাকেন। বিশেষজ্ঞ যেমন- হস্তলিপি বিশারদ, আঙ্গুলাংক বিশারদ, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক এরা সকলেই তৃতীয় পক্ষ সাক্ষী। কারণ তারা কাউকে দোষী বা নির্দোষ সাব্যস্ত করার জন্য সাক্ষ্য দেন না। সাক্ষ্য আইনের ৪৫ হতে ৫১ ধারা। পিআরবি বিধি ২৯৭।
অভিমত সাক্ষ্যের প্রাসঙ্গিকতাঃ অভিমত সাধারণত অপ্রাসঙ্গিক হলেও কতিপয় ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। বিশেষজ্ঞের অভিমতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়, অধিকার, প্রথা, প্রচলিত রীতনীতি ইত্যাদি বিষয়ে মামলায় সরাসরি সংশ্লিষ্ট নয় এমন ব্যক্তিদের অভিমত ও মতামত আদালতে প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপন করা যায়। সাক্ষ্য আইনের ৪৫ হতে ৫১ ধারা।
