উত্তরঃ তল্লাশিঃ ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৯৬, ৯৮, ৯৯-ক, ১০০ ধারা মোতাবেক পরোয়ানা মূলে বা ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৫, ১৬৬ ধারা মোতাবেক বিনা পরোয়ানায় পুলিশ অফিসার বা জিস্ট্রেটের নিকট হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অপর কোন ব্যক্তি কর্তৃক অপরাধ সংশ্লিষ্ট আলামত, বস্তুগত সাক্ষ্য, চোরাই বা লুন্ঠিত মালামাল, অপহৃত ও ভিকটিম উদ্ধারের জন্য কোন গৃহ বা আবদ্ধ স্থান, যানবাহন, অপরাধীর দেহ বা প্রকাশ্য স্থানে সাক্ষীর উপস্থিতিতে পরিচালিত কার্যক্রমকে তল্লাশি বলে। ফৌজদারীকার্যবিধি আইনের ১০২, ১০৩ ধারা, পিআরবি বিধি ২৮০।
তল্লাশির নিয়মাবলী নিম্নেউল্লেখ করা হলো-
তল্লাশির আগের নিয়মাবলীঃ
১। তল্লাশির জন্য নির্ধারিত স্থানটি প্রয়োজনীয় পাহারা দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। যাতে কোন রকম অপরাধজনক জিনিস কেউ সরিয়ে নিতে না পারে।
২। দুই/তিন জন গণ্যমান্য স্থানীয় নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে সাক্ষী করার জন্য হাজির করতে হবে। ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১০৩ ধারা এবং পিআরবি বিধি ৪৬৫।
৩। তল্লাশির জন্য নির্ধারিত স্থানের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট হতে অনুমতি নিতে হবে।
৪। তল্লাশির স্থানে কোন পর্দানশীল মহিলা থাকলে তাদের শালীনতার প্রতি লক্ষ্য রেখে মহিলাদের সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে অপরাধী যাতে অপরাধজনক মালামাল নিয়ে মহিলার বেশ ধরে পালিয়ে যেতে না পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৫। যে সমস্ত পুলিশ অফিসার তল্লাশির কাজে অংশ নিবে তাদেরকে পুলিশের পোষাক পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে।
৬। তল্লাশির জন্য নির্ধারিত স্থানে কোন অপরাধজনক মালামাল আছে কিনা তা পূর্বে বাড়ীর মালিকের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে হবে।
তল্লাশির সময়ের নিয়মাবলীঃ
১। বাড়ির মালিক ও সাক্ষীদের সাথে রেখে তল্লাশি চালাতে হবে।
২। তল্লাশি পরোয়ানায় যে স্থানে তল্লাশির জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে শুধু সে স্থান তল্লাশি করতে হবে।
৩। তল্লাশির সময় সন্দেহজনক ব্যক্তির শরীর ভালভাবে তল্লাশি করতে হবে।
৪। বাড়ীর সন্দেহজনক প্রত্যেকটি জায়গায় ভালভাবে তল্লাশি করতে হবে।
৫। বেআইনী ও বিরক্তিজনক তল্লাশি করা যাবে না।
৬। হয়রানিমূলক তল্লাশি করা যাবে না এবং তল্লাশির সময় বাদীকে সাথে রাখা যাবে না।
৭। নির্দিষ্ট জিনিস ও অপরাধজনক মালামাল ব্যতীত অন্য কোন মালামাল হস্তগত করা যাবে না।
তল্লাশির পরের নিয়মাবলীঃ
১। আটককৃত সকল মালামালের জব্দ তালিকা তৈরী করে সাক্ষীদের স্বাক্ষর নিয়ে এক কপি বাড়ীর মালিককে, এক কপি থানায় এবং এক কপি কোর্টে প্রেরণ করতে হবে।
২। কোন রকম অপরাধজনক মালামাল না পাওয়া গেলেও ৩ কপি জব্দ তালিকা তৈরী করে সাক্ষীদের স্বাক্ষর নিতে হবে।
৩। প্রতিটি অপরাধজনক মালামাল কোথায়, কিভাবে পাওয়া গেছে তা বিস্তারিত লিখে মালের গায়ে লেবেল লাগাতে হবে।
৪। সাক্ষীদের এবং বাড়ীর মালিককে দিয়ে নিজেদের শরীর তল্লাশী করে দেখাতে হবে। ৫। জব্দ তালিকা ছাড়া অন্য কোন মালামাল পুলিশ অফিসার নিয়েছে কিনা তার স্বীকার স্বাক্ষর বাড়ীর মালিকের এবং সাক্ষীদের কাছ থেকে নিতে হবে।
তল্লাশি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পিআরবি বিধি ২৮০ অনুযায়ী করতে হবে।