উত্তর:-
এজাহার:- এজাহার শব্দের আভিধানিক অর্থ প্রাথমিক তথ্য বিবরণী। কোন ধর্তব্য বা আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত
হওয়ার সংবাদ থানায় সর্বপ্রথম মেক্সখিক বা লিখিতভাবে পেক্সছানোর পর থানার অফিসার ইনচার্জ কর্তৃক উক্ত সংবাদ সরকার
নির্ধারিত বিপি ফরম নং-২৭ ও বাংলাদেশ ফরম নং-৫৩৫৬ তে লিপিবদ্ধ করলে তাকে এজাহার বলে। ফৌজদারী কার্যবিধি
আইনের ১৫৪ ধারা, পিআরবি বিধি ২৪৩।
মূলত এজাহারের দুটি অংশ। প্রথম অংশ হলো বাদী বা সংবাদদাতার দাখিলকৃত অভিযোগ সম্বলিত লিখিত আবেদন যাতে
বাদীর স্বাক্ষর থাকতে হবে (উহা প্লেন পেপার এজাহার হিসেবে গণ্য) এবং দ্বিতীয় অংশ হলো সরকার নির্ধারিত বিপি ফরম নং-
২৭ ও বাংলাদেশ ফরম নং-৫৩৫৬ তে লিপিবদ্ধকৃত বর্ণনা, যাতে অফিসার ইনচার্জ স্বাক্ষরের মাধ্যমে মামলা রেকর্ড করেন।
এজাহারের শর্তাবলী বা ক্সবশিষ্ট বা উপাদানসমূহ বা এজাহার লিপিবদ্ধ করাকালীন মামলা রুজুকারী অফিসারের লক্ষনীয় বিষয়
সমূহ নিম্নেবর্ণনা করা হলোঃ
১। এজাহার কোন গুজবের ভিত্তিতে হবে না। ইহা সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
২। এজাহারে বর্ণিত অপরাধটি আমলযোগ্য হতে হবে।
৩। ইহা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তার অনুপস্থিতিতে কোন দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট প্রদান করতে হবে।
৪। সংবাদটি লিপিবদ্ধ করতে হবে।
৫। লিপিবদ্ধ করে ইহা সংবাদদাতাকে পড়ে শুনাতে হবে।
৬। ইহা সংবাদদাতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে।
৭। ইহার সারমর্ম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট রক্ষিত বইতে রাখতে হবে।
৮। এজাহারের প্রধান ক্সবশিষ্টঃ “কি দোষ, কে করল, কখন, কোথায়, কেমনে করল দোষ কেবা তার সহায়।”
বর্ণিত ছড়া অনুসারে বাদী বা সংবাদদাতা কর্তৃক নিম্নবর্ণিত তথ্যগুলো অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে
ক) কি দোষ অর্থাৎ অপরাধের প্রকৃতি কি? অপরাধটি কি আঘাত, নাকি চুরি, নাকি ডাকাতি, নাকি খুন, নাকি ধর্ষন ইত্যাদি।
খ) কে করল অর্থাৎ অপরাধীর নাম ও ঠিকানা।
গ) কখন অর্থাৎ কোন তারিখ কোন সময় অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে।
ঘ) কোথায় অর্থাৎ ঘটনাস্থলের নাম।
ঙ) কেমনে করল দোষ অর্থাৎ অপরাধী কিভাবে অপরাধ সংঘটন করল।
চ) কেবা তার সহায় অর্থাৎ অপরাধটি সংঘটনকালে অন্য কোন অপরাধী তাকে সাহায্য করেছিল কিনা।
৯। নির্ধারিত ফরমে থানা ও জেলার নাম উল্লেখ করতে হবে।
১০। মামলার বার্ষিক ও মাসিক নম্বর সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে।
১১। ঘটনার তারিখ ও সময় উল্লেখ করতে হবে।
১২। এজাহার থানায় পেশ করার তারিখ ও সময় বা এজাহার গ্রহণের তারিখ ও সময় উল্লেখ করতে হবে।
১৩। ঘটনার স্থান, থানা থেকে দূরত্ব ও দিক দায়িত্বাধীন এলাকা নং উল্লেখ করতে হবে।
১৪। এজাহার থানা হতে কোর্ট ও পুলিশ সুপার অফিসে প্রেরণের তারিখ ও সময় উল্লেখ করতে হবে।
১৫। সংবাদদাতা বা অভিযোগকারীর নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
১৬। অপরাধীর পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
১৭। ধারাসহ অপরাধ ও লুন্ঠিত মালামালের বিবরণ উল্লেখ করতে হবে।
১৮। তদন্ত চালনার কর্মতৎপরতা এবং বিলম্বে রেকর্ড করার ক্সকফিয়ত উল্লেখ করতে হবে।
১৯। মামলা রেকর্ডকারী অফিসারের স্বাক্ষর, তারিখ ও পদমর্যাদা উল্লেখ করতে হবে।
২০। লিখিত ও মেক্সখিক উভয় প্রকার এজাহারের ক্ষেত্রে সংবাদদাতার স্বাক্ষর/টিপসহি এবং এজাহার গ্রহণকারীর স্বাক্ষর থাকতে হবে।
২১। দুইটি কার্বন সংযোগে তিন কপিতে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে এজাহার লিপিবদ্ধকরণ।
২২। ডাকাতি মামলার এজাহার গ্রহণ করার সময় ডাকাতদের সংখ্যা, ভাষা ও পরিধেয় পোষাকের বর্ণনা থাকতে হবে।
২৩। অপরাধ কাজে ব্যবহৃত কোন উপকরণ বা বস্তু বা আলামত পাওয়া গেলে তার বর্ণনা উল্লেখ করতে হবে।