উত্তর:
উত্তর:-
গ্রেফতার (Arrest): ১৮৯৮ সালে প্রণীত ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে গ্রেফতারের কোনো সংজ্ঞা দেওয়া হয় নাই। তবে গ্রেফতার বলতে কোনো ব্যক্তিকে আটক করার উদ্দেশ্যে হেফাজতে নেওয়া বা তার দেহ স্পর্শ করা বা গতিরোধ করা। অথবা আইন সঙ্গতভাবে যুক্তিসঙ্গত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনো ব্যক্তিকে তার স্বাধীনভাবে চলাচলের স্বাধীনতাকে হরণ করে আইনের হেফাজতে নেওয়াকে গ্রেফতার বা আটক বলে [ফৌঃ কাঃ ৪৬ ধারা, পিআরবি ৩১৬ বিধি]
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে গ্রেফতারের আইনগত পদ্ধতিগুলি নিম্নে দেওয়া হলো:
১। মানবাধিকার সর্বজনীন ঘোষণাপত্র -১৯৪৮ এর ৯ ধারা অনুযায়ী কাউকে খেয়াল খুশিমত গ্রেফতার, আটক অথবা নির্বাসন করা যাবে না।
২। অভিযুক্তি ব্যক্তিকে প্রথমেই নিজের পরিচয় দিতে হবে (পিআরবি ২২০ বিধি)।
৩। যাকে গ্রেফতার করতে হবে তার নাম ঠিকানা যাচাই করে প্রকৃত অপরাধীকে গ্রেফতার করতে হবে।
৪। ফৌ: কা: আইনের ৪৬(১/২/৩), ৪৭, ৪৮, ৪৯ ধারার বিধি বিধান যথাযথভাবে পালন করে গ্রেফতার কার্যকর করতে হবে [পিআরবি ১৫৩, ৩১৬ বিধি]
৫। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা যাবে না [ফৌঃ কাঃ ৫০ ধারা]
৬। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির দেহ তল্লাশি করে তার ব্যক্তিগত মালামাল একটি তালিকা তৈরি করে এক কপি তাকে দিতে হবে [ফৌঃ কাঃ ৫১ ধারা, পিআরবি ৩২২ বিধি]
৭। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি যদি মহিলা হয় তাহলে কোনো নারী পুলিশ বা অপর কোনো মহিলা দ্বারা তার দেহ তল্লাশি করতে হবে এবং মহিলা ব্যক্তির নিকট হতে চুরি, শঙ্খ ইত্যাদি জিনিসপত্র হেফাজতে নেওয়া যাবে না।[ফৌঃ কাঃ ৫২ ধারা, পিআরবি ৩২২, ৩২৮(গ) বিধি]
৮। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করতে হবে [ফৌ: কা: ৬০, ৬১, ৮১ ধারা]
৯। গ্রেফতাকৃত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের সারমর্ম জানাতে হবে [ফৌ: কা: ৮০ ধারা]
১০। অপরাধটি যদি জামিনযোগ্য হয় তাহলে তাকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে [ফৌ: কা: ৪৯৬, ৪৯৭ ধারা ও পিআরবি ৩১৭ বিধি]
১১। আসামি জরুরী বা সেবামূলক কাজে নিয়োজিত থাকলে তার বদলী না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে [পিআরবি ৩১৮ বিধি]
১২। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি যদি অসুস্থ হয় তাহলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে [পিআরবি ৩২১ বিধি, ডিএমপি ১৬]
১৩। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে থানা হাজতে থাকার জন্য ৩৬ বর্গফুট স্কেল বিশিষ্ট জায়গা দিতে হবে [পিআরবি ৩২৭ বিধি]
১৪। গ্রেফতারকৃত ব্যীক্ত যদি মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ বা অসুস্থ হয় তাহলে তার হাতকড়া পরানো যাবে না [পিআরবি ৩৩০ বিধি]
১৫। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে পানি ও খাবার সরবরাহ করতে হবে [পিআরবি ৩৩৩/৪৮৭ বিধি]
১৬। সাক্ষ্য আইনের ২৪ ধারা অনুসারে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নিকট হতে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা যাবে না [ফৌঃ কাঃ ১৬৩, ১৬৪ ধারা ও পিআরবি ৪৬৭ বিধি]
১৭। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি যদি শিশু হয় তাহলে ২০১৩ সালে (সংশোধনী) শিশু আইনের ৫২ ধারা অনুযায়ী তাকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে। [পিআরবি ৩১৭ বিধি]
১৮। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি মহিলা বা শিশু হলে আদালতের নির্দেশে তাকে নিরাপত্তামূলক হেফাজতে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। [নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধন) ২০০৩ এর ৩১ ধারা]
