প্রশ্ন- ২। পুলিশ রিপোর্ট কি ? ইহা কত প্রকার ও কি কি, সংক্ষেপে লিখুন।
উত্তরঃ পুলিশ রিপোর্ট:-
থানায় রুজুকৃত ফৌজদারীমামলা তদন্ত শেষে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কর্তৃক তদন্তের ফলাফল সম্পর্কে নির্ধারিত বিপি ফরম নং ৩৯ বা ৪২ মোতাবেক আদালতে যে প্রতিবেদন দাখিল করেন তাকে পুলিশ রিপোর্ট বলে। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৭৩ ধারা, পিআরবি বিধি ২৭২, ২৭৫।
পুলিশ রিপোর্ট প্রধানত দুই প্রকার- যথা- ক) চার্জশিট বা অভিযোগপত্র, খ) ফাইনাল রিপোর্ট বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন।
চার্জশিট বা অভিযোগপত্র:- মামলা তদন্তকারী পুলিশ অফিসার তদন্ত শেষে যখন জানতে পারেন মামলায় উল্লেখিত অপরাধটি সত্য, তখন উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা বিপি ফরম নং ৩৯ মতে অভিযুক্ত আসামীদের প্রকাশ্য আদালতে বিচারের জন্য এবং অভিযুক্ত নয় এমন আসামীদের অব্যাহতির জন্য বিবরণ দিয়ে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট যে পুলিশ রিপোর্ট পেশ করেন তাকে চার্জশিট বা অভিযোগপত্র বলে। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৭৩ ধারা ও পিআরবি বিধি ২৭২।
ফাইনাল রিপোর্ট বা চূড়ান্ত প্রতিবেদনঃ মামলা তদন্তকারী পুলিশ অফিসার তদন্ত শেষে যদি অভিযোগ প্রমাণের স্বপক্ষে যথেষ্ট পরিমাণ সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে সমর্থ না হন, তাহলে তিনি মামলাটি বিচারার্থে গ্রহণ না করে আসামীদের অব্যাহতিদানে লক্ষ্যে নিষ্পত্তিমূলক সিদ্ধান্ত দিয়ে বিপি ফরম নং ৪২ মোতাবেক আদালতে যে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করেন তাকে ফাইনাল রিপোর্ট বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন বলে। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৭৩ ধারা ও পিআরবি বিধি ২৭৫।
ফাইনাল রিপোর্ট বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন মোট ৫ প্রকার। নিম্নেবিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলোঃ-
১। চূড়ান্ত প্রতিবেদন সত্য (ঋরহধষ জবঢ়ড়ৎঃ ধং ঞৎঁব): এজাহারে বর্ণিত ঘটনা সত্য, কিন্তু কোন সাক্ষ্য প্রমাণ নেই, এমতাবস্থায় তদন্তকারী কর্মকর্তার চূড়ান্ত প্রতিবেদন হলো “চূড়ান্ত প্রতিবেদন সত্য”।
২। চূড়ান্ত প্রতিবেদন উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা (ঋরহধষ জবঢ়ড়ৎঃ ধং ওহঃবহঃরড়হধষষু ঋধষংব): ঘটনা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক, এমতাবস্থায়, তদন্তকারী কর্মকর্তার চূড়ান্ত প্রতিবেদন হলো “চূড়ান্ত প্রতিবেদন উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা”।
৩। চূড়ান্ত প্রতিবেদন তথ্যগত ভুল (ঋরহধষ জবঢ়ড়ৎঃ ধং গরংঃধশব ড়ভ ঋধপঃ): তদন্তে প্রাপ্ত ঘটনা এক প্রকার এবং এজাহারে বর্ণিত ঘটনা অন্য প্রকার, এমতাবস্থায়, তদন্তকারী কর্মকর্তার চূড়ান্ত প্রতিবেদন হলো “চূড়ান্ত প্রতিবেদন তথ্যগত ভুল”।
৪। চূড়ান্ত প্রতিবেদন আইনগত ভুল (ঋরহধষ জবঢ়ড়ৎঃ ধং গরংঃধশব ড়ভ খধ)ি: যে আইনে এজাহার দায়ের করা হয়েছে সে আইনে নয় অন্য আইনে মামলা চলবে, এমতাবস্থায়, তদন্তকারী কর্মকর্তার চূড়ান্ত প্রতিবেদন হলো “চূড়ান্ত প্রতিবেদন আইনগত ভুল”।
৫। চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমলের অযোগ্য (ঋরহধষ জবঢ়ড়ৎঃ ধং ঘড়হ-ঈড়মহরুধনষব): এজাহারে বর্ণিত ঘটনা আংশিক প্রমাণিত হলে এবং তা এফআইআর যোগ্য না হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের অনুমতিক্রমে নন-এফআইআর প্রসিকিউশন রিপোর্ট আদালতে দাখিল করবেন। এটি হলো চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমলের অযোগ্য। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৭৩ ধারা ও পিআরবি বিধি ২৭৫।