উত্তরঃ- ক্রিমিনাল রেকর্ড:- বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক থানায় ক্রিমিনাল বা অপরাধীর নামের তালিকা, সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামের তালিকা, সন্দেহভাজন ও পেশাদার অপরাধীদের তথ্য ও অপরাধ সম্পর্কে যে সকল রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয় তাকে ক্রিমিনাল রেকর্ড বলে। থানার বিভিন্ন রেজিস্টার ও নথি মোতাবেক ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয় এবং প্রতিদিনই ইহা হালনাগাদ করা হয়। পুলিশ আইনের ১২, ৪৪ ধারা ও পিআরবি বিধি ৩৯১, ২৪৩, ৩৭৪, ৩৭৭, ৩৮০।
একটি থানায় নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা যায়ঃ
১। ভিলেজ ক্রাইম নোটবুক-এর নিম্নলিখিত ৫টি অংশে তথ্য লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমে ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা যায়ঃ
১ম অংশঃ অপরাধীর রেজিষ্টারঃ এই অংশে গ্রাম এলাকায় সংঘটিত অপরাধীদের অপরাধমূলক ঘটনাবলী লিপিবদ্ধ থাকে। পিআরবি বিধি ৩৯৩।
২য় অংশ:- দন্ড রেজিষ্টারঃ এ অংশে গ্রাম এলাকার দন্ড প্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিস্তারিত বিবরণ লেখা হয়। পিআরবি বিধি ৩৯৪।
৩য় অংশঃ গ্রামীণ ইতিহাসঃ গ্রাম এলাকায় কোন সময় বিশেষ কোন অপরাধ ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছিল কিনা সে সম্পর্কে তথ্য এ অংশে লিপিবদ্ধ করা হয়। পিআরবি বিধি ৪০০।
৪র্থ অংশঃ গ্রামে বসবাসকারী লোকদের মধ্যে যারা পেশাদার অপরাধের সাথে জড়িত বলে ধারনা করা হয় তাদের তালিকা এই অংশে লিপিবদ্ধ করা হয়। পিআরবি বিধি ৪০৪।
৫ম অংশঃ ১ম ও ২য় অংশে উল্লেখিত সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম এবং বিভিন্ন ঘটনায় বা মামলায় সন্দেহযুক্ত কিন্তু দন্ডপ্রাপ্ত হয়নি এমন ব্যক্তিদের নাম এই অংশে লিপিবদ্ধ করা হয়। পিআরবি বিধি ৪০৫।
২। এজাহার বহিতে নিয়মিত মামলার ধর্তব্য অপরাধীদের নাম ঠিকানা, অপরাধের বর্ণনা সম্বলিত এজাহার কপি সংরক্ষণের মাধ্যমে ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা যায়। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৪ ধারা, পিআরবি বিধি ২৪৩
৩। জেনারেল ডায়রী বা জিডি বহিতে বাদীর বর্ণনা মোতাবেক আমলের অযোগ্য বা অধর্তব্য অপরাধীদের নাম, ঠিকানা, অপরাধের বর্ণনা লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমে ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা যায়। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৪, ১৫৫ ধারা, পুলিশ আইনের ৪৪ ধারা, পিআরবি বিধি ৩৭৭।
৪। খতিয়ান তদন্ত রেজিষ্টারে সংক্ষেপে ডাটাবেজে এজাহার মূলে রেকর্ডকৃত সকল নিয়মিত মামলার তথ্য, মানুষ নিখোঁজ সংক্রান্ত তথ্য, বিভিন্ন ক্যাটাগরীর মামলার শ্রেনীভিত্তিক পরিসংখ্যান ইত্যাদি তথ্য ইনপুটের মাধ্যমে কম্পিউটার ভিত্তিক ইলেকট্রনিক ও ডিজিটাল সিস্টেমে ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা যায়। পিআরবি বিধি ৩৮০।
৫। হৈ চৈ বিজ্ঞাপন রেজিষ্টারের মাধ্যমে পেশাদার ডাকাত ও দ্রব্যাদি লুন্ঠনের অপরাধীদের সম্পর্কে রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়। পিআরবি বিধি ২৫০।
৬। অসৎ চরিত্রের লোকদের তালিকা তথা “এ-রোল” ও “বি-রোল” রেজিষ্টারের মাধ্যমে ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়। পিআরবি বিধি ৩৪৩ ও ৩৪৪।
৭। কনভেকশন রেজিষ্টার (ফেরারী ও পলাতক আসামীর রেজিষ্টার) এর মাধ্যমে ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়। পিআরবি বিধি ৩৭৮।
৮। তদন্ত শেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত চার্জশিট বহিতে সংরক্ষণের মাধ্যমে ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়। পিআরবি বিধি ২৭২।
৯। গ্রেফতারী পরোয়ানা রেজিষ্টার মোতাবেক পলাতক আসামীদের তালিকা সংরক্ষণ করা হয়। পিআরবি বিধি ৩২৩।
১০। ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৬৫ ধারা ও পিআরবি বিধি ৩৪৯ অনুসারে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামীদের ঘোষণা সংরক্ষণ করা হয়।
১১। ক্রিমিনাল হিস্টরী রেজিষ্টার মোতাবেক অপরাধীদের রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়। পিআরবি বিধি ১১২৩।
১২। পিআরবি বিধি ৩৮৮ মোতাবেক গ্যাং কেস তথা কু কার্য সাধনের জন্য দলবদ্ধ ব্যক্তিবর্গের রেকর্ড থানায় সংরক্ষণ করা হয়।